1. admin@bongojournal24.com : admin :
মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত

বঙ্গ জার্নাল
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৬ বার পঠিত

মামুন রণবীর | বঙ্গ জার্নাল

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক পত্রিকা একতার আয়োজনে ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

একতা সম্পাদক আফরোজান নাহার রাশেদা’র সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় ‘রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনী সংস্কার’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণার সাবেক প্রধান ও এশিয় প্রবৃদ্ধি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম। এছাড়া ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও আর্থ-সামাজিক সংস্কার’ শীর্ষক আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম তার প্রবন্ধে বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা নতুন করে লেখার প্রয়োজন আছে কি না সন্দেহ আছে। তবে পরিমার্জন করতে হলে ২০২৪ এ জুলাইয়ের অভ্যুত্থান ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে প্রকাশিত গণতন্ত্র, সাম্য, এবং মানবিক মর্যাদার জন্ম জনআকাক্সক্ষার কথা নিশ্চয়ই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য ১৯৯০-র গণঅভ্যুত্থানের ত্যাগ ও আকাঙ্খাকে স্মরণ করাও যথার্থ হবে। প্রস্তাবনায় মুক্তিযুদ্ধ ও প্রজাতন্ত্র শব্দাবলী প্রতিস্থাপনের প্রয়াস অপ্রয়োজনীয় ও অবাঞ্চনীয়।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় মূলনীতিসমূহ প্রতিস্থাপনের সুপারিশটি পরিপক্ব নয়। প্রস্তাবিত পাঁচটি মূলনীতি—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ, গণতন্ত্র সমূহের মধ্যে যৌক্তিক এবং ঐতিহাসিক গ্রন্থন অনুপস্থিত। সুতরাং এ নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে সংবিধান পরিমার্জনের উদ্যোগ গ্রহণকারী কমিশন কেন ২(ক) ধারা বাতিল করার সুপারিশ প্রদানে অপারগ হলো তা বোধগম্য নয়।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম আরও বলেন, সংবিধান ও নির্বাচন কমিশন সংসদ এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অন্তর্বর্তী সরকারের সুপারিশ করেছে। কিন্তু তা করতে গিয়ে পুনরায় সুপ্রিম কোর্টের রাজনীতিকরণের বিপদের সম্মুখীন হয়েছে। যদি আনুপাতিক নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রত্যাশিত শুভ পরিবর্তন ঘটে, তাহলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা দৃঢ় এবং নিশ্চিত হতে পারে এবং তখন নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রয়োজনীয়তা নাও থাকতে পারে।

সাপ্তাহিক একতার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, আগামী বাজেট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রণয়ন করতে যাচ্ছেন, তাতে তাদের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ, প্রথমত, কিভাবে বৈদেশিক খাতে উদ্বৃত্ত ব্যালেন্স তৈরি করে ক্রমবর্ধমান ডলার রিজার্ভ তারা তৈরি করবেন বা করার সূচনা করবেন? নতুন ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাণিজ্য, বৈদেশিক ঋণ ও বিনিয়োগ নীতি কি হবে? দ্বিতীয়ত, বাজেটে যে প্রচন্ড রাজস্বঘাটতি থাকবে তা কিভাবে পূরণ করবেন? তৃতীয়ত, ব্যক্তি বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির হারকে যথাসম্ভব ধরে রাখা যায় কিভাবে তার উপায় উদ্ভাবন অর্থাৎ বিনিয়োগ আবহাওয়ার উন্নতি করে কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধি কিভাবে অব্যাহত রাখবেন? চতুর্থত, মুদ্রাস্ফীতি ও মন্দা দুইই কাটিয়ে অর্থনীতিতে কিভাবে সামষ্টিক স্থিতিশীলতা আনবেন?

তিনি বলেন, যেসব পুলিশ, শিক্ষা কর্মকর্তা, আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য কমবেশি অভিযুক্ত হয়েছেন, তাদের এখন নিরপেক্ষ-সুষ্ঠু তালিকা প্রণয়ন করে এদের মধ্যে যারা নিদের্শ পালনে বাধ্য হয়েছিলেন, অথচ যাদের অপরাধ লঘু ও ইগনোর করা যায়, তাদের শনাক্ত করে তাদের মবজাস্টিসের মধ্যে ফেলে না দিয়ে একটি সুষ্ঠু ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার প্রয়োজন আছে।

তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে ৭২-র সংবিধান রচিত হয়েছে। কিন্তু এটা সংস্কার করা যাবে না, ব্যাপারটা তা নয়। এ সংবিধানে সমস্যা আছে। এ সংবিধানে ক্রমাগত বৈষম্য বেড়েছে। লুন্ঠন, স্বৈরাচারের ভিত্তি হয়ে উঠেছে এ সংবিধান। ব্যক্তি ও জাতিগত নিরাপত্তা ক্রমাগত উপেক্ষা করা হয়েছে এ সংবিধান। তিনি বলেন, যে কারণে বৈষম্য বেড়েছে, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক দর্শনের কারণে বেড়েছে। এ দর্শনে নির্ভরশীল কাঠামো রেখে দেশে বৈষম্য কমবে না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ৫ আগস্টের যে অভ্যুত্থান হয়ে গেছে, তার মূলে বেহাত গণতন্ত্র রক্ষার একটি জনআকাঙক্ষা ছিল। এখন পর্যন্ত আমরা সেই আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। এখন পর্যন্ত শ্রেণিচরিত্রের পরিবর্তন হয়নি। যেমনটা আগে ছিল, এখনো তা একই রয়েছে।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ড. মোস্তাফিজুর রহমান,উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান, ডাকসুর সাবেক জিএস বাংলাদেশ জাসদের নেতা ডা. মুশতাক হোসেন, সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা