নিজস্ব প্রতিবেদক ||নাটোর
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা বাজারের ফিলোন মার্কেট এলাকায় মাদকসেবনের প্রতিবাদ করায় এক ব্যবসায়ী লাঞ্ছিত হওয়ার পর সেই ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এক সাহসী সাংবাদিকও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক সমাজ।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেন অপু (৫২) বাগাতিপাড়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে ব্যবসায়ী খেজের আলী তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে স্থানীয় কিছু মাদকসেবীর গাঁজা সেবনের প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা তাকে লাঞ্ছিত করে। নিরীহ ব্যবসায়ীকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসেন সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন অপু। কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা তখন আরও উগ্র হয়ে ওঠে।
অভিযুক্ত বিএনপির কথিত নেতা ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মাদকসেবী হানিফুর রহমান গেন্দা (৪৬) নেতৃত্বে সাংবাদিককে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম হয় এবং বাম কানে আঘাত পাওয়ায় তিনি শুনতে অসুবিধা অনুভব করছেন।
এছাড়াও, হানিফ গ্রুপের অন্যতম সদস্য, বিভিন্ন মামলার আসামি, মাদকব্যবসায়ী ও চাকুরিচ্যুত পুলিশ কনস্টেবল উজ্জল আলী (৩২), স্বাধীন আলী (২৪) ও সুমন আলী (২৭) সহ আরও কয়েকজন মিলে সাংবাদিকের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালায়। হামলার একপর্যায়ে তারা সাংবাদিককে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দেয়, যা উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
এ সময় স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জীবন ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসেন এবং আহত সাংবাদিক অপুকে উদ্ধার করে দ্রুত বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার চিকিৎসা দেন।পরে তিনি বাগাতিপাড়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাংবাদিক নেতাদের দাবি, দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায়, সাংবাদিকদের ওপর এমন বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলে তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
এই নৃশংস হামলা শুধু একজন সাংবাদিকের ওপর নয়, এটি মুক্ত সাংবাদিকতা ও সত্য প্রকাশের ওপর আঘাত। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে সমাজে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সাধারণ জনগণ।