মোঃ রুবেল আহমেদ || মাদারীপুর
মাদারীপুর শিবচরে সন্ন্যাসীর চর ইউনিয়নের রাজারচর মোল্ল্যা কান্দি এলাকায় দুই বারের সাবেক সফল মেম্বার মোঃ লালমিয়া বেপারী ও তার বড় ভাই বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ চান মিয়া বেপারী ছোট ভাই মোঃ হেমায়েত উদ্দিন বেপারী ও আকমত শিকদারের নামে মিথ্যা মামলার অপসারন এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মানব পাচার মামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন।
আজ ২৬ শে মার্চ সকাল ১১:০০ টার দিকে এই মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীর আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী। মানববন্ধনে প্রায়ই নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রায় পাঁচশত লোক উপস্থিত ছিল।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন এলাকার বাসিন্দা জুয়েল রানা গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার রামপুরা থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আসামি করা হয় শিবচরের রাজারচর মোল্লাকান্দি গ্রামের শুক্কুর বেপারীর ছেলে ও সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য লালমিয়া বেপারী এবং তার দুইভাই চাঁন মিয়া বেপারী ও হেয়ায়েত উদ্দিন বেপারীকে। এই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুরের শিবচরের পাঁচ্চর থেকে লাল মিয়া বেপারীকে গ্রেফতার করে রামপুরা থানা পুলিশ।
পরে মামলার বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর খোঁজ নিলে স্বজনরা আরো একটি মানবপাচার মামলার সন্ধান পান। ২৭ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার গোয়ালচামট এলাকার আব্দুল সাত্তারের ছেলে ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলাটি করেন। সেই মামলাও সাবেক ইউপি সদস্য ও তার দুইভাইকে আসামি করা হয়। এই দুটি মামলায় যথাক্রমে ৪ ও ৭ জন আসামি রয়েছেন। কোন কারণ, তদন্ত বা নোটিশ ছাড়া সাবেক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার ও মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। দ্রুত এই দুটি মানবপাচার মামলা প্রত্যাহার করে গ্রেফতার লাল মিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তারা। তা না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন বক্তারা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ইতালি নেয়ার কথা বলে বাদী ও বাদীর বন্ধুদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নেন আসামিরা। পরে ইতালি নিতে ব্যর্থ হলে আদালতে মামলা দুটি দায়ের করেন। আদালত শুনানী শেষে দুটি মামলাই থানা পুলিশকে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন।
এ সময় সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কহিনুর হাওলাদার, ইউপি সদস্য জুলহাস মাল, গ্রেফতার লাল মিয়া বেপারীর মেয়ে মারিয়া আক্তার, হেমায়েত উদ্দিনসহ এলাকার তিন শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, আমাদের লাল মিয়া মেম্বার অনেক ভালো মানুষ। তিনিসহ তার ভাইরা মাটির মানুষ। তাদেরকে এই ধরনের হয়রানি মূলক মামলা যারা করেছে আল্লাহ তাদের বিচার করুক। আমরা গ্রামবাসী সরকারের কাছে আবেদন জানাই সুষ্ঠু তদন্তে করে মুক্তি দেওয়া হোক।
ভুক্তভোগী মাওলানা বিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, আমাদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। যারা মামলা করেছে তাদেরকে আমরা কেউ চিনি না। তবে জানতে পেরেছি আমাদের এলাকয় বশির মাদবর সাথে জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাইয়ের সাথে ঝামেলা চলছে। বশির মাদবর আদম ব্যবসার সাথে জড়িত এবং তার নামে একাধিক মানব পাচারের মামলা রয়েছে। বশির মাদবর এই মামলাগুলো করিয়েছেন। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন বিষয়টি সঠিক তদন্তের জোর দাবী জানাচ্ছি। এবং এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার সহ মামলা বাজদের বিচারদাবি করছি।
এদিকে রাজধানীর গুলশান থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ সাইফুল ইসলাম জানান, বাদী ও আসামিরা পূর্বে পরিচিত কিনা সেটা জানা নেই। মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়া হবে। তবে, ঘটনার সত্যতা না পাওয়া গেলে কাউকেই হয়রানী করা হবে না।